রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২১ অপরাহ্ন

মিয়ানমারের মর্টারশেলে বাংলাদেশে নিহত ২

মিয়ানমারের মর্টারশেলে বাংলাদেশে নিহত ২

স্বদেশ ডেস্ক:

মিয়ানমার থেকে উড়ে আসা একটি মর্টারশেল বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলী গ্রামের ব্যবসায়ী বাদশা মিয়ার বাড়ির রান্না ঘরের ছাদে পড়ে।

এতে নিহত হয়েছেন বাদশা মিয়ার স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগম (৫২) এবং এক রোহিঙ্গা শ্রমিক। এছাড়া এক শিশুও আহত হয়েছে মিয়ানমার আসা মর্টারশেলে।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ৩টার দিকে ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। সীমান্তের পরিস্থিতি বর্তমানে থমথমে অবস্থান বিরাজ করছে। এলাকাবাসী আতঙ্কজনক অবস্থায় রয়েছে।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) দখলে থাকা সর্বশেষ তিনটি ক্যাম্পের মধ্যে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ইতোমধ্যেই দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এই ক্যাম্প থেকে সর্বমোট ৭১ জন বিজেপি সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাকিদের অনেকেই পালিয়ে বিভিন্ন জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে এবং মাঝেমধ্যেই এক-দুজন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। অন্যরা নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সীমান্তের বিভিন্ন সূত্রে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে দখলে যাওয়া ক্যাম্পটি পুনরুদ্ধারে মিয়ানমার থেকে হেলিকপ্টার এসে গোলাবর্ষণ করছে ওই ক্যাম্পে থাকা আরাকান আর্মির অবস্থানের ওপর।

এছাড়াও তুমব্রু লেফট ক্যাম্প হতে ২৪ জন এ পর্যন্ত পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করা বিজিপির মোট সদস্য সংখ্যা ৯৫। ওই ক্যাম্পের আরো শতাধিক সদস্য বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী ব্রিজের ওপারে মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে অবস্থান করছে। পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটলে তারা যেকোনো সময় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারে।

এছাড়াও বিজেপির ডেকুবুনিয়া ক্যাম্পটি মূলত একটি ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টার পর্যায়ের সামরিক অবস্থান। এর অবস্থান বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত থেকে দুই কিলোমিটার ভেতরে।

কিন্তু সীমান্ত পথে ব্যাটেলিয়ান হেডকোয়ার্টারে কোনো প্রকার লজিস্টিক সাপোর্ট পাঠানোর মতো অবস্থা মিয়ানমার সরকারের নেই। সেখানে সড়কপথে যোগাযোগের সকল রাস্তা আরাকান আর্মি বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থায় ডেকোবুনিয়া ক্যাম্পটি আরাকান আর্মির প্রবল আক্রমণের মুখে কতক্ষণ টিকতে পারে সেটি দেখার বিষয়।

এদিকে বাংলাদেশ সীমান্তের ২৪-২৬ পিলারের ওপাশে আতঙ্কিত শতাধিক বার্মিজ চাকমা সদস্য জড়ো হয়েছে। তারা যেকোনো সময় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ইতোমধ্যেই ওই এলাকায় পাহারা জোরদার করেছে।

অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গা পরিবার আটক
বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির পর এবার কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী এবং টেকনাফে হোয়াইক্যং উলুবনিয়া সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয়েছে। সোমবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় উলুবনিয়া সীমান্ত থেকে এক রোহিঙ্গা পরিবারকে আটক করেছে বিজিবি। স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, স্থলপথে গোলাগুলির সাথে হেলিকপ্টার থেকেও ছোঁড়া হচ্ছে গুলি। ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্রোহীদের দখল করে নেয়া অঞ্চল উদ্ধার করতে হামলা চালাচ্ছে সরকারি বাহিনী। সীমান্তজুড়ে তীব্র গোলাগুলিতে আতঙ্কে ঘর-বাড়ি ছেড়েছে স্থানীয়রা।

এদিকে বেলা ১১টার দিকে মিয়ানমার থেকে উলুবনিয়া সীমান্ত পার হয়ে একটি রোহিঙ্গা পরিবার বাংলাদেশে ঢুকে পড়লে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে। স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও তাদের সাথে তিন শিশু রয়েছে।

হোয়াইক্যং উলুবনিয়া এলাকার জালাল আহমেদ বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিয়ানমারের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি এবং বোমার শব্দ শুনতে পাই। ভয়ে সীমান্ত থেকে লোকজন সরে যাচ্ছে। অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছে না।

ঘুমধুম এলাকার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল ব্যাপক গোলাগুলিতে তিনটি গ্রামের লোকজন এলাকাছাড়া হয়েছে। সকাল থেকে আবারো গোলাগুলি চলছে।’

টেকনাফ-২ বিজির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো: মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সীমান্তে আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877